খ্রিস্টীয় নবম-দশম শতকে ইসলাম ধর্মে এক সংস্কারকামী উদারনৈতিক মতবাদের উদ্ভব ও প্রসার ঘটে। এটি সুফিবাদ নামে পরিচিত। ইসলামের মধ্য থেকে সুফিবাদের উদ্ভব হয়। অধ্যাপক ইউসুফ হুসেন বলেছেন- ‘ইসলামের বক্ষদেশ থেকেই সুফিবাদের জন্ম।‘
সুফি কথার অর্থ কি:
সুফি কথাটির অর্থ সম্পর্কে একাধিক মত প্রচলিত আছে। যথা-
- কেউ কেউ মনে করেন, সাফা অর্থাৎ পবিত্রতা থেকে ‘সুফি’ কথাটি এসেছে। দেহ, মন ও আচরণের পবিত্রতার ওপর সুফিরা জোর দিতেন বলে তাঁরা সুফি নামে পরিচিত।
- অনেকের মতে, সাফ বা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো শব্দটি থেকে ‘সুফি‘ শব্দটি এসেছে।
- আবার কেউ কেউ মনে করেন, আরবি সুফ শব্দের অর্থ হল পশম বা উল। তাঁদের মতে, সুফিসন্ত বা সাধকরা মোটা পশমের বস্ত্র পরিধান করতেন বলে তাঁরা ‘সুফি‘ নামে পরিচিত।
সুফিবাদের মূলকথা বা আদর্শ:
সুফিবাদের মূলকথা হল আল্লাহ বা ঈশ্বর এক ও অভিন্ন এবং ত্যাগ ও ভক্তির মাধ্যমেই একমাত্র ঈশ্বর লাভ সম্ভব। ঈশ্বরের প্রতি আত্মসমর্পণ, বৈরাগ্য, অন্তরের পবিত্রতা, উপবাস, উদারতা ইত্যাদি ছিল সুফিবাদের মূল আদর্শ। ফিলিপ হিট্টির ভাষায়- ‘সুফিবাদ হল ইসলামের অতীন্দ্রিয়বাদী রূপ।‘
ভারতে ত্রয়োদশ থেকে পঞ্চদশ শতকের মধ্যে ইসলাম ধর্মে যে উদারনৈতিক সংস্কার আন্দোলন হয়েছিল, তা সুফি আন্দোলন নামে পরিচিত। সুফিগুরুকে বলা হয় ‘পির‘ বা ‘খাজা‘। সুফিগুরুদের কর্মকেন্দ্রকে বলা হয় ‘দরগা‘ বা ‘খানকা‘।