জাতীয় মানবাধিকার কমিশন: (National Human Rights Commission).


জাতীয় মানবাধিকার কমিশন 'মানবাধিকার সুরক্ষা আইন, ১৯৯৩' -এর অধীনে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের গঠন: 
চেয়ারম্যান (ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি অথবা সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি) এবং চারজন সদস্য- সুপ্রীম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি, হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবং মানবাধিকার বিষয়ে বিশেষজ্ঞান সম্পন্ন দু'জন ব্যক্তি। এছাড়া National commission for S.C/S.T, মাইনরিটি এবং মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে এই কমিশনের সদস্য হন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নিয়োগ:
প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার স্পীকার, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান সংসদের দুই কক্ষের বিরোধী দলনেতার সমন্বয়ে গঠিত কমিটির পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়োগ করেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কার্যকাল:
চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ ৫ বছর বা ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত (যেটি আগে হবে) কমিশনে ক্ষমতাসীন থাকেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনারদের পদচ্যুতি:
  • দেউলিয়া।
  • অসমর্থতা।
  • তার কর্তব্যের বাইরে টাকার বিনিময়ে অন্য কোনো কাজে নিযুক্ত থাকলে।
  • মানসিক ভারসাম্যহীন।
  • কোনো অপরাধে জড়িত থাকার কারণে জেল খাটলে।
তবে রাষ্ট্রপতিকে চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট সদস্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে প্রেরণ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের রিপোর্টে রাষ্ট্রপতি সন্তুষ্ট হলে চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট সদস্যকে অপসারণ করতে পারেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কার্যাবলী:
  1. কোনো সরকারী কর্মচারীর দ্বারা কোনো ব্যক্তি অবহেলার শিকার বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে এই লঙ্ঘনের তদন্ত করা, আদালতের আদেশে কিংবা স্বতপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত শুরু করা কমিশনের প্রধান কাজ।
  2. আদালতের সামনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে জড়িত যে -কোনো কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করা।
  3. জেল এবং আটক স্থানগুলিতে জীবনযাত্রার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা এবং তার উপর সুপারিশ করার জন্য পরিদর্শন করা।
  4. মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য সাংবিধানিক ও অন্যান্য আইনি সুরক্ষা পর্যালোচনা করা এবং তাদের কার্যকর প্রয়োগের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া।
  5. মানবাধিকার -এর উপর চুক্তি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সরঞ্জাম অধ্যয়ন এবং তাদের কার্যকর প্রয়োগের জন্য সুপারিশ করা।
  6. জনগণের মধ্যে মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচার করা।
  7. মানবাধিকারের ক্ষেত্রে গ্রামোন্নয়নমূলক কর্মসূচী গ্রহণ এবং প্রচার করা।
  8. বেসরকারী ও স্বেচ্ছাসেবক সংস্থার অংশগ্রহণের মাধ্যমে মানবাধিকার কর্মসূচীর সফল রূপায়ণ ঘটানো।

অন্যান্য বিষয়:
কমিশনের দেওয়ানি আদালতের সমস্ত ক্ষমতা রয়েছে।
এটি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার এবং তাদের অধীনস্থ অন্যান্য কর্তৃপক্ষর নিকট থেকে তথ্য বা রিপোর্ট চেয়ে পাঠাতে পারে।
কমিশন কোনো ঘটনার এক বছরের মধ্যে কোনো বিষয়ে তদন্ত করতে পারে। 

Post a Comment for "জাতীয় মানবাধিকার কমিশন: (National Human Rights Commission)."